বরেন্দ্র বার্তা-২৪ ডেস্ক:
ফরিদপুরের সালথা উপজেলায় জুমার নামাজের খুতবায় আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে জনগণের ওপর জুলুম-নির্যাতন হয়েছে উল্লেখ করে বয়ান দেওয়ায় মুজাহিদুল হক (৩৫) নামে এক ইমামকে চাকরি থেকে অব্যাহতির অভিযোগ উঠেছে।
সালথা উপজেলার মাঝারদিয়া ইউনিয়নের মুরাটিয়া গ্রামের মধ্যপাড়া জামে মসজিদে গত (১৬ আগস্ট)শুক্রবার এ ঘটনা ঘটে।
ওই ইমামের চাকরি না থাকার বিষয়টি জানাজানির পর থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক’সহ বিভিন্ন মাধ্যমে শুরু হয়েছে আলোচনা-সমালোচনা। ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন অনেকেই।
মুরাটিয়া গ্রামের কয়েকজন বাসিন্দা জানান, মধ্যপাড়া জামে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি হলেন মাঝারদিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান আফছার মাতুব্বরের ছেলে স্বপন মাতুব্বর। আওয়ামী লীগ নেতার ছেলে হওয়ায় তাকে মসজিদের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়।
গত (৫ আগস্ট) শেখ হাসিনার পতন হয়। এরপর গত ৯ আগস্ট (শুক্রবার) জুমার নামাজের খুতবায় ওই মসজিদের ইমাম মুজাহিদুল হক আওয়ামী লীগ সরকারের আমলের জনগণের ওপর জুলুম-নির্যাতন নিয়ে বয়ান দেন। এ সময় সভাপতির সমর্থকরা খুতবায় বাধা দেন। পরে নামাজ শেষে ইমামকে মসজিদ থেকে বের করে দেন সভাপতি।
মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) সন্ধ্যায় ওই ইমাম হাফেজ মাওলানা মুজাহিদুল হক বলেন, মুরাটিয়া মধ্যপাড়া জামে মসজিদে গত ৮ মাস ধরে ইমামতি করছি। গত ৯ আগস্ট জমার নামাজের খুতবায় জালিমের জুলুম-নির্যাতনের পরিণাম কী হয় তা নিয়ে কথা বলি। সেই সঙ্গে ২০১৩ সালের (৫ মে) ঢাকার শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হামলার ঘটনাটি তুলে ধরি। এ সময় কালাম নামের এক মুসল্লি বাধা দেন। পরে পরিস্থিতি খারাপ হওয়ায় আমি বয়ান বন্ধ করে দেই। একপর্যায় নামাজ শেষে সভাপতি আমাকে চাকরি ছেড়ে চলে যেতে বলেন। পরে আমি চলে এসেছি।
এ বিষয়ে জানতে মুরাটিয়া মধ্যপাড়া জামে মসজিদের সভাপতি স্বপন মাতুব্বরের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি। তার মোবাইল ফোনটি বন্ধ রয়েছে।
তবে স্বপনের বাবা মাঝারদিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান আফছার মাতুব্বর দাবি করেন, ইমাম সাহেব খুতবায় ধর্মীয় বয়ান বাদ দিয়ে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে কথা বলছিলেন। পরে পোলাপান ঝামেলা বাধালে তিনি চলে যান। আমরা তাকে চাকরিচ্যুত করিনি। তিনি একাই চলে গেছেন। এখন আমরা ভালো একজন ইমাম রাখবো।