রাজশাহী জেলা প্রতিনিধি:
রাজশাহীর বাগমারায় চায়ের দোকানে ঢুকে এক যুবককে ছুরিকাঘাতে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার জেরে বিক্ষুব্ধ জনতা অভিযুক্ত তরুণকে পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে ধরে পিটিয়ে হত্যা করেছে। এতে পুলিশের এক উপপরিদর্শকসহ ছয়জন আহত হয়েছেন।
শুক্রবার বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বাগমারা উপজেলার ঝিকড়ার রনশিবাড়ি বাজারে এ ঘটনা ঘটে। ছুরিকাঘাতে নিহত যুবকের নাম আবদুর রাজ্জাক (৩৫), তিনি নওগাঁর আত্রাই উপজেলার গোয়ালবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। পিটুনিতে নিহত অভিযুক্ত তরুণ আমিনুল ইসলাম (২২) একই গ্রামের বাসিন্দা।
বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তৌহিদুল ইসলাম জানান, চায়ের দোকানে বসে থাকা আবদুর রাজ্জাককে ছুরিকাঘাতের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। কিন্তু স্থানীয় জনতা পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে অভিযুক্ত আমিনুলকে ধরে নিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সেনাবাহিনীর সহায়তা চাওয়া হয়েছে।
ঘটনার বিবরণ: শুক্রবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে আবদুর রাজ্জাক রনশিবাড়ি বাজারের নজরুলের চায়ের দোকানে বসে ছিলেন। এ সময় আমিনুল ইসলাম দোকানে ঢুকে রাজ্জাককে ছুরি দিয়ে আঘাত করেন। গুরুতর আহত অবস্থায় রাজ্জাক মাটিতে লুটিয়ে পড়েন এবং ঘটনাস্থলেই মারা যান। এরপর আমিনুল পালানোর চেষ্টা করলে স্থানীয়রা তাকে ধাওয়া করে। একপর্যায়ে তিনি রনশিবাড়ি গ্রামের আবদুর রশিদের বাড়িতে আশ্রয় নেন।
খবর পেয়ে বাগমারা থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে আমিনুলকে উদ্ধার করতে গেলে উত্তেজিত জনতা বাধা দেয়। একপর্যায়ে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে জনতা বাড়ির দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে এবং আমিনুলকে টেনে বের করে পিটিয়ে হত্যা করে। এ সময় পুলিশের উপপরিদর্শক সাদিকুল ইসলামসহ ছয়জন আহত হন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নিহত আবদুর রাজ্জাক একজন মাছ ব্যবসায়ী ছিলেন, আর আমিনুল ইসলাম বখাটে ও মাদকাসক্ত হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তাদের মধ্যে পূর্বে সম্পর্ক ভালো থাকলেও সম্প্রতি এক নারীকে মারধরের ঘটনায় তাদের মধ্যে বিরোধ তৈরি হয়। এ নিয়ে আত্রাই থানায় সাধারণ ডায়েরিও করা হয়েছিল।
ঘটনার পর এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।