স্টাফ রিপোর্টার:
নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার একডালা ইউনিয়নের নারায়নপাড়া উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রটি নানা সমস্যায় জর্জড়িত। দীর্ঘদিন থেকেই পরিত্যক্ত ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চলছে চিকিৎসা সেবা। সেখানে নেই কোন বিদ্যুৎ সংযোগ। পানি নিস্কাশনের নালা বন্ধ করে দেয়ায় বর্ষা মৌসুম জুরেই লেগে আছে জলাবদ্ধতা। দেখে মনে হবে যেন একটি ছোট পুকুর । ফলে জমে থাকা পানিতে নেমেই চিকিৎসা আর ওষুধ নিচ্ছেন রোগীরা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বার বার উপর মহলে এসব অভিযোগ জানিয়েও কোন প্রতিকার মিলছেনা।
জানা গেছে, গ্রামাঞ্চলের সুবিধাবঞ্চিত সাধারণ জনগনের চিকিৎসা সেবা সহজলভ্য করতে একডালা ইউনিয়নের নারায়নপাড়া গ্রামে উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র গড়ে তোলা হয়। একসময় উপজেলার পূর্বাঞ্চলের জনসাধারনের চিকিৎসার আশ্রয়স্থল ছিল এই উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র। কিন্তু এই উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ভবনের ছাদের পলেস্তর খসে পরা, দেয়ালে ফাটল ধরায় এবং অবকাঠামো নষ্ট হয়ে যাওয়ায় উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। কিন্তু এর পরেও ভবনটি মেরামত বা সংস্কার না করেই সেখানেই চলছে চিকিৎসা সেবা।
উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ফার্মাসিস্ট আসাদুল ইসলাম বলেন, এই উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৬০-৮০জনকে সেবা দিতে হয়। মাথার উপর ছাদের পলেস্তরা খসে পরছে। যে কোন সময় পুরো ছাদই ধ্বসে পরতে পারে।
কিন্তু চিকি’সা সেবা প্রদানে জীবনের ঝুঁকি নিয়েই কাজ করতে হচ্ছে। তিনি জানান, বহুবার চেষ্টা করেও বিদ্যুৎ সংযোগ নিতে পারেননি। ফলে প্রচন্ড গরমের মধ্যেই বসে সেবা দিতে হচ্ছে। তবে এলাকার লোকজনের সাথে ভাল সর্ম্পক থাকায় মাঝে মধ্যে হাত পাখা দিয়ে যান সেবা গ্রহিতারা। এছাড়া গত প্রায় ৩/৪ বছর হলো বর্ষা নামলেই পুরো বর্ষা জুরেই স্বাস্থ্য কেন্দ্রের চতুর দিকে পানি জমে থাকে। ফলে হাটু পানি ভেঙ্গেই রোগীরা এসে চিকি’সা নিয়ে যান।আবার অনেক সময় পানিতে দাড়িয়ে থেকেই ওষুধ নিয়ে যাচ্ছেন রোগীরা। এসব ব্যপারে উপর মহলকে জানিয়েও কোন সুরাহা হচ্ছেনা।
চিকিৎসা নিতে আসা হারিমা বেওয়া, আব্দুল জলিলসহ অনেকেই জানান, এলাকার লোকজনের একমাত্র ভরসা এই উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র। কিন্তু এই স্বাস্থ্য কেন্দ্রের অবকাঠামো সংস্কার কিংম্বা মেরামতে কর্তৃপক্ষের কোন নজর নেই। গ্রামের একজন প্রভাবশালী ব্যক্তি পানি নিস্কাশনের নালা বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে গত ৩/৪ বছর ধরে বর্ষা মৌসুম আসলেই পুরো বর্ষা জুড়েই জলাবদ্ধতা থাকে। এতে হাটু পানি ভেঙ্গে এবং পানিতে নেমে থেকেই ওষুধ নিতে হচ্ছে। এছাড়া ভবনটি অত্যন্ত ঝঁকিপূর্ণ হলেও জীবনের ঝুঁকি নিয়েই বসে থেকে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। বর্তমানে স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি নিজেই জলাবদ্ধতার রোগে আক্রান্ত। যে কোন সময় ভবন ধ্বসে পরে বড় ধরনের দূর্ঘটনা ঘটতে পারে। তাই জলাবদ্ধতা নিরসনে এবং ভবন সংস্কারে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানান।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. কেএইচএম ইফতেখারুল আলম খাঁন অংকুর বলেন, ভবনটি ভেঙ্গে নতুন করে নির্মাণের আবেদন করা আছে। কিন্তু কবে থেকে কাজ শুরু হবে তা বলা যাচ্ছে না। এছাড়া পানি নিষ্কাশনে স্থানীয় ভাবে নালা না থাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।