চবি প্রতিনিধি:
নারী শিক্ষার্থীদের জোর করে হল থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে চবি প্রশাসনের বিরুদ্ধে। গত বৃহস্পতিবার (১৮জুলাই) এই ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, দেশের বর্তমান উদ্ভুত পরিস্থিতির কারণে সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সকল শিক্ষার্থীকে হল ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। এতে বলা হয়, ১৭-০৭-২০২৪ সন্ধ্যা ৬:০০ঘটিকার মধ্যে সকল আবাসিক হলের ছাত্রীদেরকে হল ত্যাগের এবং রাত ১০:০০ ঘটিকার মধ্যে সকল আবাসিক হলের ছাত্রদেরকে হল ত্যাগের নির্দেশ প্রদান করা হলো। শিল্পী রশিদ চৌধুরী হোস্টেল এর ক্ষেত্রেও এ সিদ্ধান্ত প্রযোজ্য হবে।
প্রশাসনের হঠাৎ এমন নির্দেশনায় মেয়েদের হলে হলে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। ক্ষোভের মাত্রা ছাড়িয়ে গেলে প্রক্টরিয়াল বডি এসে ছাত্রীদের পরবর্তী দিন সকালে প্রশাসনের হেফাজতে ঢাকা অবধি নিরাপদে পৌঁছে দিবেন।
সেসময় (১৭জুলাই) এ বিষয়ে প্রক্টর অহিদুল আলম গণমাধ্যমকে জানান, হঠাৎ নোটিশ দেওয়ায় শিক্ষার্থীরা কিভাবে বাসায় যাবে সে সমস্যার কথা জানিয়েছে। তাদের সমস্যার কথা শুনে আমরা আগামীকাল সকাল ১০টা পর্যন্ত সময় বাড়িয়েছি। মেয়েদের বলেছি সকালে তাদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে তিনটি বাস দেওয়া হবে। পুলিশ পাহারায় তাদের ঢাকা পর্যন্ত দিয়ে আসা হবে।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ কথা রাখেনি চবি প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলের একাধিক শিক্ষার্থী দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন,প্রশাসন একপ্রকার জোর করে তাদের হল ছাড়তে বাধ্য করে।ঢাকা অবধি তিনটি বাস দেওয়ার কথা থাকলেও চট্টগ্রাম শহর পর্যন্ত তিনটি বাস দেওয়া হয় তাদের। এমনকি শহরে পৌছার পর শিক্ষার্থীরা নিরাপদে পৌছেছেন কিনা সে খবরও নেননি প্রশাসন।
এই বিষয়ে শেখ হাসিনা হলের ২০২১-২২ শিক্ষা বর্ষের এক শিক্ষার্থী বলেন, আমরা যখন হল ছাড়ছিলাম না তখন কতৃপক্ষ আমাদের বিদ্যুৎ, খাওয়ার পানি সব বন্ধ করে দেয়। একপ্রকার হল ছাড়তে আমাদের বাধ্য করা হয়
শেখ হাসিনা হলের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, আমার বাড়ি গাইবান্ধা। চট্টগ্রাম শহরে আমার কেউ নেই। সন্ধ্যায় আমাদের চট্টগ্রাম শহরে নামিয়ে দেয়। এমন পরিস্থিতি তীব্র যানজটে বাসে চড়ে বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। আমরা কি পরিস্থিতিতে বাসায় এলাম তা আমাদের শিক্ষকরা একটিবার জানতে চাননি।
শামশুন নাহার হলের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, প্রশাসন প্রথমে বলেছিল আমাদের ঢাকা অবধি বাস দিবে কিন্তু পরের দিন দেখি তারা আমাদের চট্টগ্রাম শহর পর্যন্ত বাস দিবে। তারা আমাদের বলেছিল বাস অক্সিজেন রোড হয়ে চট্টগ্রাম শহরে যাবে। মেক্সিমাম শিক্ষার্থী অক্সিজেন হয়ে যাওয়ার কথা কিন্তু প্রশাসন এবারো কথা রাখেনি। তারা আমাদের কিছু না জানিয়ে ভাটিয়ারী রোড দিয়ে বাস শহরে এসেছে। এতে বহু শিক্ষার্থীর ভোগান্তি হয়েছে।
এ বিষয়ে শেখ হাসিনা হলের প্রভোস্ট ড. একেএম রেজাউর রহমান বলেন, জাতীয় ভাবে হল ভ্যাকেন্টের নির্দেশনা আছে। তা তো আমাদের মানতে হবে। আমরা শিক্ষার্থীদের চট্টগ্রাম শহর পর্যন্ত পৌঁছে দিবো। আশাকরি সন্ধ্যা ৬টায় শাটডাউন শেষ হলে তারা বাসায় পৌঁছে যেতে পারবে। শিক্ষার্থীরা যাতে সড়কে ভালো ভাবে পৌছাতে পারে সে নিশ্চয়তা সরকার নিশ্চিত করবে, সব কিছু তো আর আমাদের হাতে নেই।