আঃলীগ সরকারের পতনের পরে  রাজশাহী জুড়ে ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হয়েছে

বরেন্দ্র বার্তা-২৪ ডেস্ক নিউজ:
ছাত্র জনতার প্রবল গণআন্দোলনের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হয়েছে রাজশাহীতে ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে আওয়ামী লীগ নেতাদের বাড়ি-ঘরসহ বিভিন্ন স্থাপনায়।
৫ অগাস্ট থেকে পরবর্তীতে টানা চারদিন সারা দেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বলতে প্রায় কিছুই ছিল না। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলনের মধ্যে থানা থেকে লুট করা হয়েছে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র। বাদ যায়নি সংবাদ মাধ্যমের কার্যালয়ও ৫ অগাস্ট রাজশাহীর নগর ভবনে আগুন দেওয়া হয়। পরে সেখান থেকে ল্যাপটপ, চেয়ার, টেবিল, এসি, কম্পিউটারসহ সব মালামাল লুট করা হয়।
এ ছাড়া ভাঙচুর, লুটপাট করে আগুন দেওয়া হয় সিটি করপোরেশনের ১৫টি ওয়ার্ড কার্যালয়ে। অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে কয়েকজন কাউন্সিলরের বাড়িতেও।
লুটপাটের পর আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে নগরীর উপশহরে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সিটি মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটনের বাসভবন। নগরের সিঅ্যান্ডবির মোড়ে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ (আরএমপি) সদর দপ্তরেও আগুন দেওয়ার পর চলে লুটপাট।
আগুন দিয়ে লুটপাট চালানো হয়েছে নগরীরসহ রাজশাহীর ১১টি থানায়। বিশেষ করে আরএমপি সদর দপ্তর, বোয়ালিয়া, কাশিয়াডাঙ্গা, রাজপাড়া, মতিহার, মালোপাড়া ফাঁড়ি মুহূর্তের মধ্যে ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়। লুট করা হয় অস্ত্র-গুলিসহ মালামালও। জেলা পুলিশের মোহনপুর থানা পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
হামলা থেকে বাদ যায়নি হাইকেট পার্ক ও রাজশাহী চিড়িয়াখানা। হাইকেট পার্কে আগুন না দিলেও ব্যাপক ভাঙচুর করার পর নিচতলা থেকে ১০ তলা পর্যন্ত সমস্ত মালামাল লুট করা হয়।পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে রাজশাহী এ এইচ এম কামারুজ্জামান চিড়িয়াখানা ও উদ্যানের আবাসিক হোটেল। এরপর লুটপাট করা হয় সেখানকার মালামাল। লুট হয়েছে লেকের মাছসহ পশু-পাখিও। হরিণ ধরে নিয়ে জবাই করে পিকনিট করেছে হামলাকারীরা।
অনলাইন নিউজ পোর্টাল পদ্মাটাইমস টোয়েন্টিফোর ডটকমের কার্যালয়সহ মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল আলাম বেন্টুর ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানগুলো গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।নগরীর কল্পনার মোড়ে লবঙ্গ ফাস্টফুড অ্যান্ড চাইনিজ এবং মোল্লাপাড়ায় লবঙ্গ কনভেনশন সেন্টারে আগুন দেওয়ার পর লুটপাট করা হয়েছে। পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল আলম বেন্টুর দুটি প্রাইভেট কার ও নয়টি ডাম্প ট্রাক। পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে নগরীর কোট স্টেশন মোড়ের তার ব্যবসায়িক কার্যালয়ও।
ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে সাবেক প্রতিমন্ত্রী আব্দুল ওয়াদুদ দারা, রাজশাহী-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা ও অধ্যক্ষ শফিকুর রহমান বাদশা, রাজশাহী-৩ আসনের সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান আসাদ, রাজশাহী-৪ আসনের সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ, রাজশাহী-১ আসনের সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরীর বাড়ি এবং ‘থিম ওমর প্লাজা’ মার্কেটসহ সংসদ সদস্যদের রাজনৈতিক কার্যালয় ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান।
ভাঙচুর ও লুটপাটের পর গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে নগর আওয়ামী লীগের কার্যালয় ভবন। ভাঙচুর করে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে নগরীসহ জেলার শতাধিক আওয়ামী লীগের কার্যালয় ও নেতাদের ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান। ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ হয়েছে বাগমারা বঙ্গবন্ধু কমপ্লেক্স ও জাদুঘর।
গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে নগরীর লক্ষ্মীপুর মোড়ের বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল। রাজশাহী কলেজ ও সিঅ্যান্ডবি মোড়ে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল ভাঙতে না পেরে কালি দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *