ভারতের পণ্যে উচ্চ শুল্ক আরোপের ঘোষণা ট্রাম্পের

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
(৩১ জানুয়ারি) যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
ফোনালাপে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পারস্পরিক লাভজনক ও বিশ্বাসযোগ্য অংশীদারিত্বের ওপর জোর দেন মোদি। তবে দুই নেতার ফোনালাপের পরের দিনই ভারতকে নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন ট্রাম্প। দেশটির ওপর উচ্চহারে শুল্ক আরোপের হুমকি আবার দিলেন তিনি।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির খবর অনুযায়ী, মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতকে ‘ভয়াবহ শুল্ক আরোপকারী দেশ’ বলে অভিযুক্ত করেছেন। একই তকমা দিয়েছেন চীন ও ব্রাজিলকেও। তিনি ঘোষণা করেছেন, তার প্রশাসন এই তিনটি দেশকে এই পথে আর চলতে দেবে না।
ফ্লোরিডায় হাউস রিপাবলিকানদের একটি সম্মেলনে বক্তব্য দেয়ার সময় ট্রাম্প বলেন, আমরা আর এটি হতে দেব না। কারণ আমরা আমেরিকাকে অগ্রাধিকার দেব।
মার্কিন প্রেসিডেন্টের দাবি, ভারত, চীন ও ব্রাজিল তাদের নিজ নিজ স্বার্থে কাজ করছে। তারা যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষতি করতে চায়। দেশ তিনটিই ক্রমবর্ধমান প্রভাবশালী ব্রিকস গোষ্ঠীর সদস্য।
ট্রাম্প বলেন, আমরা বাইরের দেশ এবং সেই ব্যক্তিদের ওপর শুল্ক আরোপ করব যারা আমাদের প্রকৃতপক্ষে ক্ষতি করতে চায়। তারা আমাদের ক্ষতি করতে চায়। তবে তারা মূলত তাদের দেশকে উন্নত করতে চায়। চীন একটি ভয়াবহ শুল্ক আরোপকারী দেশ। ভারত ও ব্রাজিলও তাই। তবে আমরা আর এটি হতে দেব না। কারণ আমরা আমেরিকাকে অগ্রাধিকার দেব।
ট্রাম্পের এই মন্তব্য এমন সময় এলো যখন ভারতের মোদি তার সঙ্গে ফোনালাপ করেছেন। সোমবার রাতে দুই নেতার মধ্যে ফোনালাপ হয়। আলোচনায় শুল্কের বিষয়টি উঠেছিল কিনা তা স্পষ্ট নয়। তবে যুক্তরাষ্ট্রে ভারতের অবৈধ অভিবাসীদের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
এর আগে গত সপ্তাহে গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, ডোনাল্ড ট্রাম্প ও মোদির মধ্যে ফেব্রুয়ারিতে ওয়াশিংটনে বৈঠক আয়োজনের চেষ্টা করছেন দুই দেশের কূটনীতিকেরা। এ বিষয়ে অবগত ভারতীয় দুটি সূত্র রয়টার্সকে এই তথ্য জানান।
চীনকে ঠেকাতে যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত অংশীদার ভারত। ট্রাম্প প্রশাসনের সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক বাড়াতে আগ্রহী নয়াদিল্লি। পাশাপাশি নিজেদের দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষ কর্মী ভিসা পাওয়া সহজ করতে চায় ভারত। দুই নেতার বৈঠক হলে সেখানে এ দুই বিষয় নিয়ে আলোচনা হতে পারে।
তবে ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে ফেরায় যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি হওয়া ভারতীয় পণ্যে শুল্ক আরোপের শঙ্কা তৈরি হয়েছে। ট্রাম্প আগেও বলেছেন, ভারতে রপ্তানি করা যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যে উচ্চ হারে শুল্ক আরোপ করা রয়েছে। পাল্টায় ভারতের পণ্যেও শুল্ক আরোপের পক্ষে অবস্থানের ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি।
এ ছাড়া ক্ষমতায় বসার বহু আগে থেকেই অবৈধ অভিবাসীবিরোধী ডোনাল্ড ট্রাম্প। যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিয়েই অভিবাসীদের বিরুদ্ধে একের পর এক নির্বাহী আদেশ জারি করেছেন তিনি। জন্মসূত্রে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব বাতিল থেকে শুরু করে সীমান্তে জরুরি অবস্থা জারি পর্যন্ত বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছেন তিনি। এরই মধ্যে তার নেয়া পদক্ষেপের প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। ট্রাম্পের এমন অভিবাসীবিরোধী পদক্ষেপে যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে বসবাসরত হাজার হাজার ভারতীয় নাগরিক বিতাড়িত হওয়ার ঝুঁকিতে পড়ে গেছেন।
(সূত্র-এনডিটিভি)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *